সজনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
সজনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানার আগে এর সম্পর্কে আগে ভালো করে জেনে নেওয়া যাক ।
সজনে পাতা
সজনে (বৈজ্ঞানিক নাম: Moringa oleifera) হচ্ছে “Moringaceae” পরিবারের “Moringa” নামের একটি গাছ । সজনের কাঁচা লম্বা ফল সবজি হিসেবে খাওয়া হয়, পাতা খাওয়া হয় শাক হিসেবে । খরা সহিষ্ণু ও গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলের একটি উদ্ভিদ । ডাল ও বীজের মাধ্যমে বংশবিস্তার করলেও আমাদের দেশে সাধারণত ডালের মাধ্যমে বংশবিস্তার করানো হয় ।
সজিনা গাছের পাতাকে বলা হয় অলৌকিক পাতা । এটি পৃথিবীর সবচেয়ে পুষ্টিকর হার্ব। গবেষকরা সজিনা পাতাকে বলে থাকেন নিউট্রিশন্স সুপার ফুড এবং সজিনা গাছকে বলা হয় মিরাকেল ট্রি । সজনে আমাদের দেশের একটি জনপ্রিয় সবজি। সজনে বিভিন্নভাবে রান্না করা হয়। সজনের পাশাপাশি সজনে পাতারও অনেক উপকারিতা রয়েছে ।
সজনে পাতার উপকারিতা
০১। প্রতি গ্রাম সজনে পাতায় একটি কমলার চেয়ে সাত গুণ বেশি ভিটামিন সি, দুধের চেয়ে চার গুণ বেশি ক্যালসিয়াম ও দুই গুণ বেশি প্রোটিন, গাজরের চেয়ে চার গুণ বেশি ভিটামিন এ এবং কলার চেয়ে তিন গুণ বেশি পটাশিয়াম আছে । ফলে এটি অন্ধত্ব, রক্তস্বল্পতা সহ বিভিন্ন ভিটামিণের ঘাটতি জনিত রোগের বিরুদ্ধে বিশেষ হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে ।
০২। এতে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক থাকে এবং পালংশাকের চেয়ে তিন গুণ বেশি আয়রণ থাকে, যা এ্যানেমিয়া দূরীকরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে ।
০৩। সজনে শরীরে কোলেস্টেরল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও অন্যতম অবদান রাখে ।
০৪। মানুষের শরীরের প্রায় ২০% প্রোটিন যার গাঠনিক একক হলো এমাইনো এসিড । শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মেটাবোলিজম এবং অন্যান্য শারীরবৃত্ত্বীয় কার্যাবলী পরিপূর্ণরূপে সম্পাদনে এমাইনো এসিড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। মানুষের শরীরের যে ৯ টি এমাইনো এসিড খাদ্যের মাধ্যমে সরবরাহ করতে হয়, তার সবগুলোই এই সজনের মধ্যে বিদ্যমান ।
০৫। এটি শরীরে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডায়াবেটিসের মত কঠিন রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে।
০৬। নিয়মিত দৈনিক সেবন শরীরের ডিফেন্স মেকানিজমকে আরো শক্তিশালী করে এবং ‘ইমিউনিটি স্টিমুল্যান্ট’ হওয়ার দরুন এটি ‘এইডস’ আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
০৭। এটি শরীরের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে পুষ্টিবর্ধক হিসেবে কাজ করে।
০৮। শরীরের ওজন কমাতেও ব্যায়ামের পাশাপাশি এটি বেশ কার্যকরী ভুমিকা পালন করে থাকে।
০৯। এটি মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই। পাতা থেকে তৈরি এক টেবিল চামচ পাউডারে ১৪% প্রোটিন, ৪০% ক্যালসিয়াম, ২৩% আয়রণ বিদ্যমান, যা ১ থেকে তিন বছরের শিশুর সুষ্ঠু বিকাশে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় এবং বুকের দুধ খাওয়ানোকালীন সময়ে ৬ টেবিল চামচ পাউডার একজন মায়ের প্রতিদিনের আয়রণ এবং ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করে থাকে ।
১০। এটির এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান । এটি যকৃত ও কিডনী সুস্থ্য রাখতে এবং রূপের সৌন্দর্য বর্ধক হিসেবেও কাজ করে থাকে ।
১১। সজনে-তে প্রায় ৯০টিরও বেশি এবং ৪৬ রকমের এন্টি-অক্সিডেন্ট বিদ্যমান।
১২। এতে ৩৬ টির মত এন্টি-ইনফ্ল্যামমেটরি বৈশিষ্ট্য আছে। এছাড়াও এটি অকাল বার্ধক্যজনিত সমস্যা দূর করে এবং ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে ।
সজিনার আরও বিভিন্ন ব্যবহার
০১. শরীর ব্যথা : শরীরের কোনো স্থানে ব্যথা হলে বা ফুলে গেলে সজিনার শিকড়ের প্রলেপ দিলে ব্যথা ও ফোলা সেরে যায়।
০২. কান ব্যথা : সজিনার শিকড়ের রস কানে দিলে কানের ব্যথা সেরে যায়।
০৩. মাথা ব্যথা : সজিনার আঠা দুধের সাথে খেলে মাথা ব্যথা সেরে যায়। আঠা কপালে মালিশ করলে মাথা ব্যথা সেরে যায়।
০৪. ফোঁড়া সারায় : সজিনার আঠার প্রলেপ দিলে ফোঁড়া সেরে যায়।
০৫. মূত্রপাথরি ও হাঁপানি : সজিনা ফুলের রস দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে মূত্রপাথরি দূর হয়। ফুলের রস হাঁপানি রোগের বিশেষ উপকারী।
০৬. গ্যাস থেকে রক্ষা : সজিনা পাতার রসের সাথে লবণ মিশিয়ে খেতে দিলে বাচ্চাদের পেট জমা গ্যাস দূর হয়।
০৭. কুকুরের কামড়ে : সজিনা পাতা পেষণ করে তাতে রসুন, হলুদ, লবণ ও গোলমরিচ মিশিয়ে সেবন করলে কুকুরের বিষ ধ্বংস হয়।
০৮. জ্বর ও সর্দি : পাতার শাক খেলে যন্ত্রণাধায়ক জ্বর ও সর্দি দূর হয়।
০৯. বহুমূত্র রোগ : সজিনা পাতার রসে বহুমূত্র রোগ সারে।
১০. কোষ্ঠকাঠিন্য ও দৃষ্টিশক্তি : সজিনার ফুল কোষ্ঠকাঠিন্য দোষ দূর করে এবং দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে।
১১. সজিনা ফুল দুধের সাথে রান্না করে নিয়মিত খেলে কামশক্তির বৃদ্ধি ঘটে। এর চাটনি হজমশক্তি বৃদ্ধি করে।
১২. গেঁটে বাত : সজিনার ফল নিয়মিত রান্না করে খেলে গেঁটে বাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
১৩. ক্রিমিনাশক ও টিটেনাস : সজিনার কচি ফল ক্রিমিনাশক, লিভার ও প্লীহাদোষ নিবারক, প্যারালাইসিস ও টিটেনাস রোগে হিতকর।
১৪. অবশতা, সায়াটিকা : সজিনার বীজের তেল মালিশ করলে বিভিন্ন বাত বেদনা, অবসতা, সায়াটিকা, বোধহীনতা ও চর্মরোগ দূর হয়।
১৫. পাতার রস হৃদরোগ চিকিৎসায় এবং রক্তের প্রবাহ বৃদ্ধিতে ব্যবহার হয়।
১৬. পোকার কামড়ে এন্টিসেপ্টিক হিসেবে সজিনার রস ব্যবহার করা হয়।
১৭. ক্ষতস্থান সারার জন্য সজিনা পাতার পেস্ট উপকারী।
১৮. সজিনা শরীরের প্রতিরোধক ব্যবস্থা শক্তিশালী করে। শরীর থেকে বিষাক্ত দ্রব্য, ভারি ধাতু অপসারণ এবং শরীরে রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপি নিতে সহায়তা করে।
১৯. ইন্টেস্টাইন ও প্রোস্টেট সংক্রমণ : সজিনা বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করে।
২০. শ্বাসকষ্ঠ, মাথা ধরা, মাইগ্রেন, আর্থাইটিস এবং চুলপড়া রোগের চিকিৎসায় ও সজিনা কার্যকর ভূমিকা রাখে।
সজনে পাতার অপকারিতা
সজনে এর মূল অনেক সময় বিষাক্ত হতে পারে, যা স্নায়ুকে অবশ করে দিতে পারে। তাই খাওয়ার ক্ষেত্রে এটি বর্জন করাই শ্রেয় । সজনে পাতার অনেক উপকারিতা থাকলেও এটি অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে সৃষ্টি হতে পারে বিভিন্ন সমস্যা ।
- শজনে পাতা অতিরিক্ত খাওয়া হলে বমি বমি ভাব, পেটের সমস্যা, ক্ষুধামন্দা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে ।
- ব্লাড প্রেসারের ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত শজনে পাতার গুঁড়া বা রস খেতে থাকলে ব্লাড প্রেসার কমে যেতে পারে ।
- শজনে পাতা সংলগ্ন ডালগুলো আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকর । এ ডালগুলোতে ক্ষতিকর উপাদান থাকে, যেগুলো আমাদের দেহের ইমিউনিটি সিস্টেমের ক্ষতি করে।
সাজনা পাতা খাওয়ার নিয়ম
শজনে পাতা কীভাবে খাবেন ? শজনে পাতা বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যেতে পারে-
- শাকের মতো ভেজে খাওয়া যেতে পারে বা সেদ্ধ করে ভর্তা করে খাওয়া যেতে পারে। তবে রান্না করলে ভিটামিন সি অনেকাংশে কমে যায়।
- প্রাকৃতিকভাবে রোদে শুকিয়ে গুঁড়া করে খাওয়া যেতে পারে।
- ব্লেন্ড করে জুস হিসেবেও খাওয়া যেতে পারে।
- চায়ের মধ্যে দিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
- কোনো কিছুর অতিরিক্ত গ্রহণ শরীরের জন্য ভালো নয়। তাই শজনে পাতার গুঁড়া বা রস একদম নিয়মিত না খেয়ে একটু বিরতি দিয়ে খাওয়া ভালো। ১০-১৫ দিন খাওয়ার পর কিছুদিন বিরতি দিয়ে খেলে ভালো হয়।
সজিনা থেকে তৈরি কয়েকটি বিশেষ খাবারের রেসিপি
১. মসুর ডালে সজিনা : প্রথমে মসুর ডাল-১ কাপ, সজিনা- ১ কাপ, পেঁয়াজ কুচি, তেল, হলুদ গুঁড়া;, রসুন কুচি, মেথি, সরষে বাটা, লবণ, কাঁচামরিচ, ধনেপাতা পরিমাণমতো নিতে হবে। মসুর ডাল পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর হাঁড়িতে পানি চাপিয়ে তাতে মসুর ডাল, রসুন কুচি, হলুদ গুঁড়া দিয়ে ভালো করে সেদ্ধ করতে হবে। অন্য পাত্রে তেল দিয়ে সজনে ভেজে তাতে মেথি দিয়ে তুলে নিয়ে পেঁয়াজ কুচি বাদামি করে ভেজে তেলসহ ডালে ঢেলে দিতে হবে। কাঁচামরিচ কালি ও ধনেপাতা দিয়ে চুলা থেকে নামাতে হবে।
২. সজিনা লাউ নিরামিষ : সজিনা ২৫০ গ্রাম, লাউ- আধা কেজি, শুকনা শিমের বীচি-২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি, রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়া, টমেটো-১টি, কাঁচামরিচ-২টি, ধনেপাতা পরিমাণমতো নিতে হবে। সজিনার আঁশ ফেলে ১.৫-২ ইঞ্চি করে টুকরা করে নিতে হবে। একই সাথে টমেটো ও লাউ টুকরো করতে হবে। শুকনো শিমের বীচি তাওয়ায় ভেজে পাটায় ভেঙে খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে। তেলে পেঁয়াজ অল্প ভেজে রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়া, সজিনা ও লাউ দিয়ে রান্না করতে হবে। শিমের বীচি দিয়ে ১০ মিনিট ঢেকে রাখতে হবে এরপর টমেটো দিতে হবে। লাউ ও সজিনা সেদ্ধ হলে, মরিচ ফালি ও ধনেপাতা কুচি দিয়ে ২-৩ মিনিট পর চুলা হতে নামাতে হবে।
৩. সজিনা পাতার পাকোড়া : সজিনা পাতা-১০০ গ্রাম, মসুর ডাল-২০০ গ্রাম, পেঁয়াজ ও আলু-২০০ গ্রাম করে, কাঁচামরিচ, ধনেপাতা, লবণ ও তেল পরিমাণমতো। মসুর ডাল পরিষ্কার করে ১ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। সজিনা ডাঁটা ভালো করে ধুয়ে কুচি, কুচি করে কাটাতে হবে। আলু, পেয়াজ, ধনেপতা, কাঁচামরিচ, সব কুচি করে কেটে নিতে হবে। মসুরের ডাল হালকা করে বেটে নিতে হবে। ডালের সাথে কুচানো সজিনা পাতা, আলু, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ ও ধনেপাতা ভালো করে মেশাতে হবে। চুলায় কড়াই বসিয়ে তেল গরম করতে হবে। হাত দিয়ে গোল করে বড়ার মতো করে বানিয়ে তা গরম তেলে ভালোভাবে ভেজে নিতে হবে। সস্ বা চাটনিসহ গরম গরম পাকোড়া পরিবেশন করতে হবে।
৪. আলু সজিনার তরকারি : সজিনা-৫০০ গ্রাম, আলু, পেঁয়াজ কুচি, রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া ও কাঁচামরিচ পরিমাণমতো নিতে হবে। সজিনা ডাঁটার আঁশ ফেলে ২ ইঞ্চি লম্ব করে কেটে নিতে হবে। আলুর খোসা ছিলে লম্বাকরে টুকরা করে কেটে নিতে হবে। তেলে রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া, লবণ দিয়ে সরষে বাটা, আলু, সজিনা দিয়ে চুলায় চড়াতে হবে। পরে পানি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। সবজি সেদ্ধ হয়ে গেলে ধনেপাতা কুচি দিয়ে নামিয়ে নিতে হবে।
৫. সজিনা দিয়ে ইলিশ মাছ : ইলিশ মাছ-৪ টুকরা, সজিনা ৪-৫টি, বড় পেঁয়াজ কুচি-১টি কাঁচামরিচ, হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া, ধনিয়া গুঁড়া, জিরা বাটা, তেল ও লবণ পরিমাণ মতো নিতে হবে। ইলিশ মাছের টুকরাগুলো ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। সজিনাগুলো ১.৫-২ ইঞ্চি করে কেটে নিতে হবে। কড়াইতে তেল গরম হলে পেঁয়াজ কুচি ও সব মসলা, লবণ কড়াইতে দিয়ে সজিনা দিতে হবে। সজিনা দিয়ে অল্প কষিয়ে নিতে হবে। কষানো হলে তাতে মাছ দিতে হবে। তারপর অল্প নাড়াচড়া করে পানি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। ঝোল মাখা মাখা হলে নামানোর আগে কাঁচামরিচ দিয়ে নামাতে হবে।
৬. চিংড়ি নারিকেলে সজিনা মালাইকারি : সজিনা ২৫০ গ্রাম, চিংড়ি-১৫/২০টি (মাঝারি আকৃতির), নারিকেল বাটা-আধা কাপ, চিনি-১ চা চামচ, কাঁচামরিচ-২/৩টি, পরিমাণমতো পেঁয়াজ বাটা, আদা বাটা, তেজপাতা, তেল, হলুদ গুঁড়া নিতে হবে। প্রথমে চিংড়ির মাথা ও ভেতরের কালো রগ ফেলে ধুয়ে সজিনার আঁশ ফেলে টুকরো করে রাখতে হবে। নারিকেল বেটে নিতে হবে। তেল গরম হলে তেজপাতা, পেঁয়াজ বাটা, আদা বাটা, আস্ত চিংড়ি দিয়ে নেড়ে চেড়ে সজিনা ভেজে নিতে হবে। পানি দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। এরপর বাটা নারিকেল, সামান্য চিনি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। ২০ মিনিট রান্নার পর নামানোর পূর্বে কাঁচামরিচ দিয়ে নামাতে হবে।
৭. আম সজিনার ঝোল : সজিনা ভাটা-২৫০ গ্রাম, কাঁচা আম-৬-৭ টুকরা, পেঁয়াজ বাটা, পাঁচ ফোড়ন, রসুন বাটা, কাঁচামরিচ, সরিষার তেল, হলুদ গুঁড়া ও লবণ পরিমাণমতো। প্রথম সজিনা ডাঁটার আঁশ ফেলে টুকরা করতে হবে। কাঁচা আমের ওপরের সবুজ ত্বক ফেলে লম্বা করে কাটতে হবে। কাঁচামরিচ বেটে নিতে হবে। তেল গরম হলে পেঁয়াজ বাটা, পাঁচ ফোড়ন বাটা, হলুদ ও রসুন বাটা দিয়ে কষাতে হবে। এরপর সজিনা ডাঁটা ও লবণ দিয়ে ২ কাপ পানি দিয়ে অল্প আঁচে ঢেকে দিতে হবে। সজিনা সেদ্ধ হলে আমের টুকরা ও মরিচ বাটা দিয়ে জ্বাল দিতে হয়। তেল ওপরে ভেসে উঠলে নামিয়ে ফেলতে হবে।
৮. দই সজিনা : সজনে-৫০০ গ্রাম টকদই-২০০ গ্রাম, রসুন আদা, কাঁচামরিচ বাটা, হলুদ গুঁড়া ও তেজপাতা পরিমাণমতো নিতে হবে। সজনে ডাঁটার আঁশ ফেলে ১.৫ ইঞ্চি করে টুকরা করে নিতে হবে। তেলে তেজপাতা ভেজে পেঁয়াজ বাটা, রসুন বাটা, আদা বাটা, হলুদ গুঁড়া ও লবণ দিয়ে কষিয়ে সজিনা ঢেলে দিতে হবে। ভালোভাবে নেড়ে টক দই দিয়ে অল্প পানি সহযোগে ২০ মিনিট পর নামাতে হবে।
সজনে পাতার গুড়া করার নিয়ম
সজনে পাতা গুড়া করার নিয়ম খুবই সহজ , আমরা যে কেউ সজনে পাতা গুড়ো করে সংরক্ষণ করে সারা বছর ধরে খেতে পারি । নিচে সজনে পাতা গুড়া করার নিয়ম বিস্তারিত দেওয়া হলো –
প্রথমে পরিপক্ক সজনে পাতা গাছ থেকে পেরে পানিতে ধুয়ে নিতে হবে । তারপর রদে ভালো করে শুকিয়ে নিতে হবে । এমনভাবে শুকাতে হবে যেন সেটি মরমরে হয়ে যায় । এরপর শুকনো পাতা ব্লেন্ডারে বা গুড়া করার মেশিনে দিয়ে ভালো করে গুড়া করে নিতে হবে । তারপর একটি কাঁচের পাত্রে ভালো করে সংরক্ষণ করে সারা বছর ধরে খাওয়া যাবে এই সজনে পাতার গুড়া । কিন্তু একটি কথা মনে রাখতে হবে , কোনো কিছুই অতিরিক্ত গ্রহণ শরীরের জন্য ভালো নয় । তাই শজনে পাতার গুঁড়া বা রস একদম নিয়মিত না খেয়ে একটু বিরতি দিয়ে খাওয়া ভালো। ১০-১৫ দিন খাওয়ার পর কিছুদিন বিরতি দিয়ে খেলে ভালো হয় ।
সাজনা পাতার পাউডার খাওয়ার নিয়ম
সাজনা পাতা আমরা বিভিন্নভাবে খেতে পারি । নিচে কয়েকটি বহুল প্রচলিত সাজনা পাতার পাউডার খাওয়ার নিয়ম দেওয়া হলো-
১. চা এর সাথে মিশিয়ে সাজনা পাতা খাওয়া যেতে পারে । দিনে দুইবার ।
২. সালাদের সাথে মিশিয়ে সাজনা পাতার গুড়া খাওয়া যায় ।
৩. শরবতের সাথে মিশিয়ে খেলেও খুব ভালো ফল পাওয়া যায় ।
৪. স্যুপের সাথে মিশিয়েও এই গুড়ো খাওয়া যায় ।