আমরা অনেকেই বলে থাকি যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজ কি ? আমরা হয়তো অনেকেই মনে করি কেন্দ্রীয় ব্যাংক অন্যান্য ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা ছাড়া আর কোন কাজ নেই । কিন্তু কথাটা সত্য নয় । একটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনেক কাজ করে থাকে । তাই আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর কাজ বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যাবলী !
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যাবলী বা,
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজ কি
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জনকল্যাণের উদ্দেশ্যে গঠিত একটি একক ও অনন্য ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার নিয়ন্ত্রক হিসেবে সরকার, জনগণ ও অন্যান্য ব্যাংক এবং সর্বোপরি দেশের উন্নয়নে নানাবিধ কাজ করে থাকে।
ক. সাধারণ কার্যাবলি:
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিষ্ঠিত কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বাধ্যতামূলকভাবে কতিপয় বিধিবন্ধ বা সাধারণ কার্য সম্পাদন করতে হয় । যেমন -:
১. নোট ও মুদ্রা প্রচলন : কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের কাগজি নোট ও ধাতব মুদ্রা প্রচলনের একমাত্র প্রতিষ্ঠান। দেশের ব্যবসায়-বাণিজ্য ও সকল অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সম্পাদনের জন্য কী পরিমাণ নোট ও মুদ্রার প্রয়োজন কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা নির্ধারণপূর্বক সেই পরিমাণ নোট সরকারের অনুমতিক্রমে ইস্যু করে থাকে। তবে নোটের বিপরীতে আইন অনুযায়ী সোনা, রূপা ও বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণ করতে হয়। দেশের অর্থনৈতিক চাহিদার ওপর ভিত্তি করে নোট ইস্যু করা এবং নোটের বিপরীতে ব্যাংকের নিরাপত্তা হিসেবে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ রাখতে হয় বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইচ্ছামাফিক নোট প্রচলন করতে পারে না।
২. মুদ্রার মান সংরক্ষণ : কেন্দ্রীয় ব্যাংক নোট ও মুদ্রা প্রচলনের পাশাপাশি মুদ্রার মান সংরক্ষণে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করে । কেন্দ্রীয় ব্যাংক হলো এমন একটি ব্যাংক যার প্রধান দায়িত্ব হলো মুদ্রার মান সংরক্ষণ করা । কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে অর্থ সরবরাহ হ্রাস-বৃদ্ধি করে অর্থের ক্ষমতা সংরক্ষণের মাধ্যমে মুদ্রার মান বজায় রাখে ।
৩. ঋণ নিয়ন্ত্রণ : কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন কৌশল বা পদ্ধতি অবলম্বনের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের ঋণের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে মুদ্রাস্ফীতি কাম্যমাত্রায় বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে । কারণ অতিরিক্ত ঋণের প্রবাহ বৃদ্ধিতে মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি হতে পারে। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ নিয়ন্ত্রণ কৌশল হিসেবে ব্যাংক হার নীতি, খোলাবাজার নীতি, জমার হার পরিবর্তন নীতি, ঋণের বরাদ্দকরণ নীতি ইত্যাদি ব্যবহার করে বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের ঋণদান ক্ষমতা হ্রাস-বৃদ্ধির মাধ্যমে বাজারে ঋণের প্রবাহ তথ্য ঋণ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
৪. মুদ্রাবাজার নিয়ন্ত্রণ : কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের মুদ্রাবাজারের অভিভাবক হিসেবে কাজ করে। মুদ্রাবাজার হলো এমন একটি স্বল্পমেয়াদি অর্থ সংগ্রহের বাজার যেখান থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্বল্পমেয়াদি (১ বছর বা তার কম সময়) অর্থসংস্থান করতে পারে। যে মুদ্রাবাজার যতবেশি সুসংগঠিত ও শক্তিশালী সে দেশ শিল্পে ও বাণিজ্যে ততবেশি উন্নত।
৫. বৈদেশিক বিনিময় নিয়ন্ত্রণ: কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রার বৈদেশিক মূল্য নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। দেশীয় মুদ্রার সম্মানজনক বিনিময় হার সৃষ্টি করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের অভ্যন্তরে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন বা আগমন-নির্গমন নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এছাড়াও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কাম্যন্তরে রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়।
৬. ব্যাংক ব্যবস্থার উন্নয়ন : দেশের শিল্প ও ব্যবসায়-বাণিজ্যের উন্নয়নের স্বার্থে এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশে নতুন নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা ও নতুন নতুন শাখা খোলার অনুমতি প্রদান করে। এছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের ব্যাংক ব্যবস্থার সেবা ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
খ. সরকারের ব্যাংক হিসেবে কার্যাবলি :
বর্তমান বিশ্বের সব দেশেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক সে দেশের সরকারের ব্যাংক হিসেবে পরিচিত। সরকারকে আর্থিক বিষয়ে পরামর্শ দান এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার কর্তৃক গৃহীত অর্থনৈতিক নীতি ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারকে সহযোগিতা করা ব্যাংকটির অন্যতম লক্ষ্য। নিচে সরকারের ব্যাংক হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পাদিত কার্যাবলি আলোচনা করা হলো:
১. সরকারের তহবিল সংরক্ষণ : কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের অর্থ ও অন্যান্য সম্পদের তহবিল সংরক্ষণ করে। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের অর্থ সংগ্রহের পূর্ণ দায়িত্ব পালন করে। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সরকারি তহবিলের সংরক্ষক বলা হয়ে থাকে।
২. অর্থ জমা গ্রহণ ও স্থানান্তর: সরকারের ব্যাংক হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন উৎস থেকে সরকারের রাজস্ব ও পাওনা সংগ্রহ করে। এছাড়াও সরকারের নির্দেশে এক স্থান হতে অন্যস্থানে অথবা বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থ স্থানান্তর করে থাকে।
৩. সরকারের হিসাব সংরক্ষণ : কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের যাবতীয় আয়- ব্যয় হিসাব সংরক্ষণ করে। সরকারের পক্ষে বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত অর্থ এবং বিভিন্ন পক্ষকে প্রদেয় অর্থের হিসাব কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংরক্ষণ ও পরিচালনা করে।
৪. সরকারের আর্থিক লেনদেন সম্পাদন : কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের পক্ষে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আর্থিক লেনদেন সম্পাদন করে থাকে। বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয়, বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ ইত্যাদি কাজ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের পক্ষে করে থাকে ।
৫. ঋণদান ও ঋণের তত্ত্বাবধান : কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের আর্থিক সংকটের সময় সরকারকে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রদান করে থাকে। এছাড়া সরকারের পক্ষে নানান ধরনের বন্ড বা অন্যান্য সিকিউরিটিজ জনগণের নিকট বিক্রয় করে সরকারকে ঋণ সংগ্রহের ব্যবস্থা করা এবং উক্ত ঋনের তদারকি করার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংক পালন করে থাকে।
৬. আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উন্নয়ন : কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিদেশি ব্যাংক এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংস্থার সাথে সরকারের সম্পর্ক স্থাপনে ও সম্পর্কের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই ব্যাংকটি প্রয়োজনে সরকারের পক্ষে উক্ত বিদেশি ব্যাংক ও অর্থনৈতিক সংস্থা যেমন- বিশ্ব ব্যাংক (World bank), আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF), এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (ADB), ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (IDB) প্রভৃতির সাথে যোগাযোগ সম্পর্ক রক্ষা করে ।
৭. সরকারের উপদেষ্টা ও প্রতিনিধি : কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের অর্থনৈতিক নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়নে সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কেন্দ্রীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন ব্যাংক, সংস্থা ও বিদেশের সাথে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে।
৮. সরকারের আর্থিক নীতি বাস্তবায়ন: কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের আর্থিক নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়নে সরকারকে শুধু যাবতীয় তথ্য ও পরিসংখ্যান সংগ্রহ এবং সংরক্ষণে সহায়তা করে না ক্ষেত্রবিশেষ তা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
গ. অন্যান্য ব্যাংকের ব্যাংকার হিসেবে কার্যাবলি:
একটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের ব্যাংকার হয়ে বিভিন্ন কার্যাবলী পালন করে থাকে । নিচে অন্যান্য ব্যাংকের ব্যাংকার হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যাবলি আলোচনা করা হলো :
১. ব্যাংক গঠন ও সম্প্রসারণ : যেকোনো বাণিজ্যিক ব্যাংক গঠন বা প্রতিষ্ঠার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি নিতে হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি ব্যতীত কোনো ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার অনুমতি প্রদান করে থাকে। ব্যাংকের নতুন শাখা খোলার জন্য অর্থাৎ ব্যাংকের সম্প্রসারণের জন্যও কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনুমোদন দিয়ে থাকে।
২. ব্যাংকের তালিকাভুক্তকরণ : যে সকল বাণিজ্যিক ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ম- নির্দেশনা মেনে এর সদস্যভুক্ত হতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের তালিকাভুক্তির কাজ করে থাকে। তালিকাভুক্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে যে সকল সুযোগ-সুবিধা পায় অতালিকাভূক্ত ব্যাংকগুলো তা পায় না। এছাড়াও তালিকাভুক্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো প্রত্যক্ষভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয় বলে এ সকল ব্যাংকের প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অনেক দৃঢ় হয়।
৩. বাধ্যতামূলক তহবিল সংরক্ষণ: তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে তাদের সংগৃহীত আমানতের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিকট জমা রাখতে হয়। আমানতকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণে মূলত কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ ধরনের কাজ করে থাকে।
৪. নিকাশ ঘর হিসেবে কাজ : নিকাশ ঘরের প্রবর্তন আধুনিক ব্যাংকিং জগতে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর আন্তঃব্যাংকিং দেনা-পাওনা নিষ্পত্তিস্থলকে নিকাশ ঘর বলে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিকাশ ঘরের প্রধান হিসেবে আন্তঃব্যাংকিং দেনা-পাওনা নিষ্পত্তিতে দায়িত্ব পালন করে থাকে।
৫. ঋণদান : কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনে রূপদান করে থাকে। অর্থাৎ ব্যাংকগুলোর আর্থিক সংকটের সময় যখন কোনো উৎস হতে তহবিল সংগ্রহ করার সুযোগ হয় না, সে সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের ঋণদানের মাধ্যমে সহযোগিতা করে থাকে।
৬. ঋণ তদারকি : বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কোন খাতে কী পরিমাণ ঋণ সরবরাহ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা তদারকি করে। এছাড়াও বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রদত্ত ঋণ আদায়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করে থাকে।
৭. হিসাব নিরীক্ষা : দেশে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল ব্যাংকিং ব্যবস্থা পরিচালনার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকের হিসাব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে থাকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংককে সঠিক হিসাব সংরক্ষণে বাধ্য রাখে।
৮. উপদেষ্টা ও প্রতিনিধিত্ব: কেন্দ্রীয় ব্যাংক তালিকাভুক্ত ব্যাংকসমূহকে তার কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে ও কৌশলে সম্পাদনের জন্য বিভিন্নভাবে উপদেশ ও পরামর্শ প্রদান করে থাকে। এছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশে অথবা বিদেশে তালিকাভুক্ত ব্যাংকসমূহের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে ।
ঘ. অন্যান্য কার্যাবলি :
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যাবলি শুধু উপরিউক্ত গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় । একটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে এবং জনগণের কল্যাণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও নানাবিধ কার্য সম্পাদন করে থাকে :
১. কৃষি উন্নয়ন: দেশের কৃষি খাতে উন্নয়নের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে কৃষি ব্যাংক স্থাপন বা কৃষি ঋণ কার্যক্রম পরিচালিত করে থাকে। কৃষি ও কৃষিজ শিল্পের উন্নয়নে ব্যাংকটি বিভিন্ন ধরনের কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে থাকে ।
২. শিল্পোন্নয়ন : শিল্পক্ষেত্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে উৎসাহমূলক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের নীতিনির্ধারণসহ ঋণ সহযোগিতা করে থাকে। শিল্পক্ষেত্রে মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শিল্পোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৩. গবেষণা কার্যক্রম : শিল্প, বাণিজ্য তথা সামগ্রিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধনের উপায় উদ্ভাবন, পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং এর বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এরূপ গবেষণার স্বার্থে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পৃথক নেল থাকে।
৪. প্রতিবেদন তৈরি ও প্রকাশনা : কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের চলমান আর্থিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণপূর্বক প্রতিবেদন তৈরি করে এবং তা জনগণকে জানানোর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ করে থাকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এবং ব্যাংকিং খাতের উন্নয়নে যে সকল কার্য সম্পাদন করে থাকে তা সত্যিই প্রশংসনীয় এবং ফলপ্রসূ । কারণ একটি দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সর্বাত্তক সহযোগীতা করে । তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যাবলী বলে শেষ করা যাবে না ।