ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা- ১ম পত্র
অধ্যায়-১ ব্যবসায়ের মৌলিক ধারণা
অধ্যায়-২ ব্যবসায় পরিবেশ
অধ্যায়-৩ একমালিকানা ব্যবসায়
অধ্যায়-৪ অংশীদারি ব্যবসায়
অধ্যায়-৫ যৌথ মূলধনী ব্যবসায়
অধ্যায়-৬ সমবায় সমিতি
অধ্যায়-৭ রাষ্ট্রীয় ব্যবসায়
অধ্যায়-৮ ব্যবসায়ের আইনগত দিক
অধ্যায়-৯ ব্যবসায়ে সহায়ক সেবা
অধ্যায়-১০ ব্যবসায় উদ্যোগ
অধ্যায়-১১ ব্যবসায়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
অধ্যায়-১২ ব্যবসায় নৈতিকতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা
ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা- ২য় পত্র
অধ্যায়-১ ব্যবস্থাপনার ধারণা
অধ্যায়-২ ব্যবস্থাপনার নীতি
অধ্যায়-৩ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ
অধ্যায়-৪ সংগঠিতকরণ
অধ্যায়-৫ কর্মীসংস্থান
অধ্যায়-৬ নেতৃত্ব
অধ্যায়-৭ প্রেষণা
অধ্যায়-৮ যোগাযোগ
অধ্যায়-৯ সমন্বয়সাধন
অধ্যায়-১০ নিয়ন্ত্রণ
Saturday, July 13

হিসাব বিজ্ঞানের নীতিমালা , গ্যাপ, হিসাববিজ্ঞানের ধারণা

হিসাব বিজ্ঞানের নীতিমালা যেকোন প্রতিষ্ঠানের হিসাব রাখার জন্য জানা অত্যন্ত জরুরী। হিসাব বিজ্ঞানের নীতিমালা আমাদেরকে কিভাবে দৈনন্দিন লেনদেন হিসাবরক্ষণ করতে হয় সে সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকে।

হিসাব বিজ্ঞানের নীতিমালা (Principles of Accounting)

হিসাব বিজ্ঞানের নীতিমালা কি? / হিসাববিজ্ঞানের নীতিমালা কাকে বলে?

হিসাব বিজ্ঞানের নীতিমালা বলতে এমন কতকগুলো মৌলিক বা স্বতঃসিদ্ধ সত্যকে বুঝায় যেগুলো হিসাবরক্ষণের ক্ষেত্রে সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য হয় এবং সকল ক্ষেত্রে সত্য বলে প্রমাণিত হয়। হিসাববিজ্ঞান নীতিমালা হলো এমন কতগুলো ধারণা যা হিসাবরক্ষনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হয় তা না হলে একটি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা সঠিকভাবে প্রকাশিত হয় না। হিসাববিজ্ঞানের মৌলিক ধারণা/অনুমান সমূহের উপর ভিত্তি করে হিসাববিজ্ঞান পেশা নীতি সমূহের উন্নয়ন ঘটিয়েছে যা আর্থিক ঘটনা কিভাবে লিপিবন্ধ এবং বর্ণনা করা উচিত তা নির্দেশ করে। নিম্নে হিসাববিজ্ঞানের নীতিমালা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

(ক) ক্রয়মূল্য / ঐতিহাসিক মূল্য নীতি (Cost Principle):

ক্রয়মূল্য নীতি বর্ণনা করে যে, সম্পত্তিগুলোকে তাদের ঐতিহাসিক মূল্য বা ক্রয়মূল্যে লিপিবদ্ধ করতে হবে। ক্রয়মুল্যে ব্যবহৃত হয় কারণ এটা প্রাসঙ্গিক এবং নির্ভরযোগ্য। স্থায়ী সম্পত্তি গুলিকে দেখাতে হবে তাদের ঐতিহাসিক মূলো/ অর্জন মূল্যে। স্থায়ী সম্পত্তির পরিবহন সংস্থাপন খরচের জন্য ঐ সম্পত্তির অর্জন মূল্য বেড়ে যাবে। হিসাব বিজ্ঞানের নীতিমালা এর এটি প্রথম নীতি। 

 

উদাহরণ : একটি যন্ত্রপাতির ক্রয়মূল্য ৩৫,০০০ টাকা, পরিবহন ব্যয় ২,০০০ টাকা, সংস্থাপন বায় ২,৫০০ টাকা এবং খরচ ৫০০ টাকা। উপরোক্ত খরচগুলোর জন্য যন্ত্রপাতি হিসাবকে (৩৫,০০০+২,০০০+২,৫০০+৫০০) ৪০,০০০ টাকায় ডেবিট করতে হবে।

 

ক্রয়মূল্য নীতিকে প্রভাবিত করেঃ

  • টাকার ক্রয় ক্ষমতা
  • বাজার মূল্য
  • মুদ্রাস্ফীতি বা মুদ্রা সংকোচনের হার।

(খ) আয় স্বীকৃতি নীতি (Revenue Recognition Principle):

আয় স্বীকৃতি নীতি বলতে বুঝায়- যেই হিসাব বছরে আয় অর্জিত হয়েছে সেই হিসাব বছরে তা হিসাবভুক্ত করতে হবে। হিসাব বছরে যদি পণ্যে বিক্রয় বা সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে তবে এরূপ লেনদেনের ফলে সৃষ্ট আয়কে অর্জিত আয় বলে। এরূপ আয় হতে টাকা পাওয়া না গেলেও তা আয় হিসাবে স্বীকৃত হবে।

এই নীতি অনুসারে- 

 

  • আয় যে হিসাবকালে অর্জিত হবে সেই হিসাবকালেই আয় হিসাবে চিহ্নিত ও লিপিবদ্ধ করতে হবে।
  • অগ্রীম/অনার্জিত/অনুপার্জিত আয়কে বর্তমান হিসাবকালের সংশ্লিষ্ট প্রাপ্ত আয় হতে বাদ দিতে হবে।
  • বকেয়া আয়কে সংশ্লিষ্ট হিসাব কালের আয়ের সাথে যোগ করে দিতে হয়।
  • এই নীতি হিসাব বিজ্ঞানের বকেয়া ভিত্তি কে সমর্থন করে।

 উদাহরণ : ৩১শে ডিসেম্বর ২০০৭ সমাপ্ত বছরে মোট বিক্রয় ২,০০০ টাকা যার মধ্যে বাকিতে বিক্রয় ১০০০ টাকা। এই নীতি অনুযায়ী ২০০৭ সালের আয় হিসাবে লিপিবদ্ধ হবে ,০০০ টাকা।

হিসাব বিজ্ঞানের নীতিমালা
হিসাববিজ্ঞানের নীতিমালা

(গ) মিলকরণ / ব্যয় স্বীকৃতি / সমন্বয় নীতি (Matching / Expense Recognition Principle):

মিলকরণ নীতি বর্ণনা করে যে, কোন হিসাবকালে যদি খরচ সংগঠিত হয় (নগদ অর্থে প্রদান করা না হলেও) সেই খরচ ঐ হিসাবকালের খরচ খাতে লিপিবদ্ধ হবে। অন্যদিকে যদি কোন খরচ অগ্রিম প্রদান করা হয় তবে উক্ত খরচ ঐ হিসাবকালের খরচ হিসাবে লিপিবন্ধ হবে না, সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হবে। 

  • এই নীতির কারনেই বকেয়া খরচ সংশ্লিষ্ট প্রদত্ত খরচের সাথে যোগ হয় এবং অগ্রিম খরচ সংশ্লিষ্ট প্রদত্ত খরচ হতে বাদ দিতে হয়।
  • খরচকে ঐ হিসাবকালের অর্জিত আয়ের বিপরীতে চার্জ করতে হয়/মিলকরণ করতে হয়য়।
  • বিক্রয়মূল্য থেকে মোট জনামূল্য বান না দিয়ে বিক্রিত পন্যের মূল্য বান দিতে হয়।
  • ব্যয় স্বীকৃত নীতিকে আয়ব্যয় সমন্বয় নীতিও বলা হয়।

(ঘ) পূর্ণ প্রকাশ নীতি (Fall Disclosure Principle):

পূর্ণ প্রকাশ নীতি অনুসারে আর্থিক বিবরণীতে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ এবং বহিস্থ ব্যভারকারীর নিকট গুরত্বপূর্ণ ও আকাংঙ্খিত তথ্যগুলো প্রকাশ করে দিতে হয়। যেমন- মজুদ পণ্যের মূল্যায়ন পদ্ধতি, বিনিয়োগের বাজার মূল্য, সম্ভাব্য দায় প্রভৃতি নোট আকারে বিবরণীর সাথে সংযুক্ত করতে হয়।

এ নীতি অনুযায়ী-

  • আর্থিক বিবরণীতে পার্থক্যের সৃষ্টি করে এমন ধরনের পরিস্থিতি এবং ঘটনা ব্যভারকারীদের নিকট প্রকাশ করতে হবে।
  • জাবেদায় ব্যাখ্যা দেয়া হয়।
  • ব্যংক সমন্বয় বিবরণী তৈরী করা হয়।
  • আর্থিক বিবরণীতে খসড়া, টিকা ও গণনা তুলে ধরা হয়।
  • উদ্ধৃতপত্রে Netting করা হয়।

পূর্ণ প্রকাশ নীতিতে কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হয়। এগুলো হলো-

  • পূর্ণ প্রকাশ থেকে প্রাপ্ত সুবিধা তার ব্যয়ের চেয়ে বেশী হতে হবে।
  • গোপন তথ্য প্রকাশ সম্পর্কে সর্তক থাকতে হবে।
  • প্রতিবেদন বা বিবরণী বেশি জটিল যেন না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

মূলত এই চারটি নীতিই হিসাববিজ্ঞানের জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ। সঠিকভাবে এবং নিক্ষুত আর্থিক অবস্থা প্রকাশের জন্য আমাদের উপরোক্ত হিসাববিজ্ঞান নীতিমালা অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

সর্বজনস্বীকৃত হিসাববিজ্ঞান নীতিমালা Generally Accepted Accounting Principles (GAAP)

সর্বজনস্বীকৃত হিসাববিজ্ঞান নীতিমালা কি? / সর্বজনস্বীকৃত হিসাববিজ্ঞান নীতিমালা কাকে বলে?

সর্বজন স্বীকৃত হিসাববিজ্ঞান নীতিমালা বলতে এমন কতকগুলো মৌলিক বা স্বতঃসিদ্ধ সত্যকে বুঝায় যেগুলো হিসাবরক্ষ ক্ষেত্রে সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য হয় এবং সকল ক্ষেত্রে সত্য বলে প্রমাণিত হয়।

সর্বজনস্বীকৃত’ কথাটির মানেই হলো এই নীতিগুলির পিছনে অবশ্যই “নির্ভরযোগ্য কর্তৃপক্ষীয় সমর্থন” রয়েছে। হিসাববিজ্ঞানের কতিপয় নিয়ম-কানুন মেনে সারা পৃথিবীর হিসাববিজ্ঞানীগণ তাদের হিসাবপত্র সংরক্ষণ করেন এবং চূড়ান্ত ফলাফল বিভিন্ন ব্যবহারকারীর নিকট উপস্থাপন করেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় একই পদ্ধতিতে ও ছকে আর্থিক বিবৃতিসমূহ উপস্থাপন ও ব্যবহারকারীদের জন্য তা বোধগম্য করে তোলাই হলো এ নীতিমালার মূল লক্ষ্য।

অন্যভাবে বলতে গেলে হিসাববিজ্ঞানের সে সকল নীতিমালা হিসাবরক্ষণের ক্ষেত্রে সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য হয় ঐ নীতিমালাগুলোকে সর্বজনস্বীকৃত হিসাববিজ্ঞান নীতিমালা বা  Generally Accepted Accounting Principles(GAAP) বলে।

হিসাববিজ্ঞানের ধারণাসমূহ

কোনো বাস্তব সমস্যা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হলে প্রথমে কার্যকারণ সম্পর্কে পণ্ডিতগণ কিছু অনুমান করে থাকে। বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে ঐ অনুমানগুলো যুক্তিসংগত কিনা তা জানবার চেষ্টা করেন। প্রথমে হয়তো চল্লিশটি অনুমান করা হতে পারে। পরে দীর্ঘ পর্যবেক্ষণও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর হয়তো দেখা গেল মাত্র চারটি অনুমান যুক্তিসিদ্ধ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয়। তা হলে কেবলমাত্র চারটিকেই Postulate বলে গণ্য করা হবে। নিম্নে হিসাববিজ্ঞানের ধারণা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল :

১. অর্থনৈতিক / ব্যবসায় সত্ত্বা ধারণা (Economic Entity Assumption):

এই ধারণা অনুসারে কারবারের একটি পৃথক সত্তা আছে বলে অনুমান করা হয়। এ ধারণা অনুসারে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মালিক বা মালিকদের হতে পৃথক থাকে। মালিককে অন্যান্য পাওনাদারের মতোই বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

অর্থনৈতিক সত্তা সংক্রান্ত ধারণা বিশ্লেষণ করলে এর নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো দেখতে পাওয়া যায়-

  • মালিক ও কারবার সম্পূর্ণ পৃথক। কারবার ও তৃতীয় পক্ষের মধ্যে যে সম্পর্ক বিদ্যমান, কারবার ও মালিকের মধ্যে সেই একই সম্পর্ক বিদ্যমান।
  • কারবার হলো হিসাবের কেন্দ্রবিন্দু। কারবারের দৃষ্টিকোণ হতে হিসাব রাখা হয়।
  • কারবার মূলধনের জন্য মালিকের নিকট দায়ী থাকে। লাভ হলে এই দায় বৃদ্ধি পায়, ক্ষতি হলে এই দায় হ্রাস পায়।
  • মালিক কর্তৃক উত্তোলনকে মূলধন থেকে বাদ দেওয়া হয় এই নীতি অনুযায়ী।
  • ব্যবসায় সত্তা ধারনাকেই মালিকানা সত্ব ধারণা বলা হয়। 

অতএব, বলা যায় “ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান থেকে মালিক ভিন্ন” এ বিষয়টিই আর্থিক সত্তা অনুমানের মূল তথ্য মালিক দুটি পৃথক সত্ত্বা। মালিক ও কারবারের মধ্যে সংঘটিত যাবতীয় লেনদেন প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করে হিসাবভুক্ত করা হয়।

২. আর্থিক মূল্যের একক ধারনা (Monetary Unit Assumption) :

আর্থিক লেনদেনের লিপিবদ্ধ করা হিসাববিজ্ঞানের প্রধান কাজ। অর্থ বিনিময়ের মাধ্যমে যে সকল ঘটনাবলিকে অর্থমূল্যে মূল্যায়ন করা যায় না, যতই গুরুত্বপূর্ণ হোক না কেন সেসব ঘটনাবলিকে হিসাবের আওতা হতে বাদ দিতে হয়। যে সকল ঘটনাবলিকে অর্থমূল্যে মূল্যায়ন করা যায় একমাত্র সেসব ঘটনাবলিকে হিসাবের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

আর্থিক মূল্যের একক ধারণা বিশ্লেষণ করলে এর নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো দেখতে পাওয়া যায়-

  • অর্থের মুল্যে প্রকাশ করা যায় শুধুমাত্র এমন ধরণের ঘটনাকেই হিসাবের আওতায় আনতে হবে।
  • কোম্পানির মানবসম্পদকে হিসাবের বইতে লিপিবদ্ধ করা হয় না।

৩। চলমান প্রতিষ্ঠান ধারণা (Going concern Assumption):

চলমান প্রতিষ্ঠান ধারণা বর্ণনা করে যে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রকৃতি অনুযায়ী লাভজনক ভাবে অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত চলতে থাকবে। ব্যবসায়ের প্রচলিত রীতি হলো ধারাবাহিক কার্য। প্রতিষ্ঠানের অবসায়নের কথা বাদ দিলে কারবার দীর্ঘকাল চালু থাকবে বলেই ধরে নেওয়া হয়। চলমান ধারণা হিসাবসংক্রান্ত একটি মৌলিক ধারণা।

চলমান প্রতিষ্ঠান ধারণা বিশ্লেষণ করলে এর নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো দেখতে পাওয়া যায়-

  • ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান তার প্রকৃতি অনুযায়ী লাভজনকভাবে অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত চলবে।
  • স্থায়ি সম্পত্তিকে ক্রয়মূল্যে দেখাতে হয়।
  • স্থায়ি সম্পত্তি- চলতি সম্পত্তি ও স্থায়ি দায় – চলতি দায় এর মধ্যে পার্থক্য করতে হয় এই ধারণা অনুযায়ী।

৪। সময়কাল / হিসাবকাল ধারণা (Time Period Assumption) :

সাধারণভাবে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকাল, চিরকাল ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকবে এ রকম ধারণার উপর ভিত্তি করে হিসাবনিকাশ করা হয়। কিন্তু কারবারের মালিক এবং অন্যান্য স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নির্দিষ্ট সময়কাল পর কারবারের ফলাফল জানতে আগ্রহী। এজন্য প্রতিষ্ঠানের অনির্দিষ্ট আয়ুষ্কালকে কতকগুলো ছোট-ছোট অংশে ভাগ করা হয়। কালের এ বিভাজনকে বলে হিসাবকাল। হিসাবকাল সাধারণত এক বৎসরের হয়ে থাকে।

নিম্নলিখিত কারণে হিসাবকাল নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় :

  • প্রতিষ্ঠানের সহিত স্বার্থযুক্ত ব্যক্তিগণ নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর কারবারের আর্থিক অবস্থা কিরূপ বা সম্পত্তি ও দায়ের পরিমাণ কিরূপ এ সকল তথ্য জানতে আগ্রহী থাকে।
  • বিনিয়োগকারীগণ নির্দিষ্ট সময় পর জানতে চান বিনিয়োগের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে কিনা।
  • পাওনাদাররা জানতে চায় প্রতিষ্ঠানটি তাদের পাওনা মিটাতে সক্ষম হবে কিনা।
  • পরিচালকেরা তাদের নীতি নির্ধারণের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সময়ের কার্যাবলির পর্যালোচনা করতে আগ্রহী থাকে।
  • সরকার কারবারের আয়ের উপর প্রতি বছর কর ধার্য করেন।